০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে

  • Update Time : ০৬:৩৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
  • 100

 


হেনলি পাসপোর্ট সূচকের ২০২৩ সালের তৃতীয় কোয়ার্টারে গবেষণায় বাংলাদেশের পাসপোর্ট ১৯৯টি দেশের পাসপোর্টের মধ্যে ৯৭তম অবস্থানে। বছরের শুরুতে সূচকের প্রথম সংস্করণে বাংলাদেশ ১০১তম স্থানে ছিল। অর্থাৎ পূর্ববর্তী র‌্যাঙ্কিং থেকে চারটি দেশের পাসপোর্টের অবস্থান পেরিয়ে উপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশী পাসপোর্ট। হেনলি পাসপোর্ট সূচক মূলত ভিসা ছাড়াই দেশগুলো কতগুলো দেশে যেতে পারে তার উপর ভিত্তি করে পাসপোর্টের মূল্যায়ন করে থাকে। ২০২৩-এর দ্বিতীয় কোয়ার্টারে অবশ্য বাংলাদেশী পাসপোর্ট সূচকের তালিকায় ৯৬তম স্থানে নেমে গিয়েছিল।

চলুন, এবারের র‍্যাঙ্কিং অনুসারে, বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই কতগুলো দেশে যেতে পারছেন তা দেখে নেয়া যাক।

২০২৩-এ যে দেশগুলোতে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা

ফ্রি ভিসা

এটি বিদেশ ভ্রমণের জন্য এমন এক অনুমতি, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক আগে থেকে কোনো রকম ভিসা প্রাপ্তির প্রয়োজন ছাড়াই বিদেশে প্রবেশ করতে পারেন। ভিসামুক্ত অ্যান্ট্রি নামে পরিচিত এই নিয়মের মধ্যে ভ্রমণকারিদের কোনোরূপ ভিসা ফি প্রদান করে আনুষ্ঠানিক ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। অথচ পর্যটন, ব্যবসা বা পারিবারিক নানা উদ্দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গন্তব্যের দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেন। এই সময়কালটি বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে।

২০২৩ সালে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ১৮টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই দেশগুলো বাংলাদেশী নাগরিকদের বিভিন্ন সময়সীমার জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের অনুমতি দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের আগে বা সেই দেশে প্রবেশকালে কোনোরূপ ভিসার নেয়ার ঝামেলায় যেতে হয় না। বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়া যেসব দেশে প্রবেশ করা যাবে সেগুলো হলো

ওশেনিয়া

১. কুক দ্বীপপুঞ্জ

২. ফিজি

৩. মাইক্রোনেশিয়া

৪. নিউ

ক্যারিবিয়ান

১. বাহামাস

২. বার্বাডোজ

৩. ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ

৪. ডমিনিকা

৫. গ্রেনাডা

৬. হাইতি

৭. জ্যামাইকা

৮. মন্টসেরাট

৯. সেন্ট কিট্স এবং নেভিস

১০. সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন্স

১১. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো

এশিয়া

১. ভুটান

আফ্রিকা

১. লেসোথো

২. গাম্বিয়া

২০২৩-এ যে দেশগুলো বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের আগমনী ভিসা সরবরাহ করবে

আগমনী ভিসা

এই অনুমতিপত্রটি অন-অ্যারাইভাল ভিসা বা ভিসা অন অ্যারাইভাল নামে পরিচিত। এটি এমন এক ধরনের ছাড়পত্র যেটি যোগ্য ভ্রমণকারীদের গন্তব্যের দেশে প্রবেশের আগ মুহূর্তে প্রদান করা হয়। গন্তব্যের দেশে যাওয়ার মুহূর্তে প্রবেশস্থল তথা বিমানবন্দর, স্থল চেকপয়েন্ট বা সমুদ্র বন্দরে এই ভিসা ইস্যু করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের আগে নিজেদের দেশে থাকা অবস্থায় আগমনী ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় না।

অন-অ্যারাইভাল ভিসার জন্য ভ্রমণকারীদের তাদের গন্তব্যের দেশ কর্তৃক নির্ধারিত কিছু শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। এই শর্তাবলি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেসব দেশ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের আগমনী ভিসা সরবরাহ করে থাকে সেগুলো হলো:

ওশেনিয়া

১. সামোয়া

২. টুভালু

৩. ভানুয়াতু

এশিয়া

১. কম্বোডিয়া

২. মালদ্বীপ

৩. নেপাল

৪. তিমুর-লেস্তে

আমেরিকা

১. বলিভিয়া

আফ্রিকা

১. বুরুন্ডি

২. কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ

৩. কোমোরো দ্বীপপুঞ্জ

৪. জিবুতি

৫. গিনি-বিসাউ

৬. মাদাগাস্কার

৭. মৌরিতানিয়া

৮. মোজাম্বিক

৯. রুয়ান্ডা

১০. সেশেল্স

১১. সিয়েরা লিওন

১২. সোমালিয়া

১৩. টোগো

২০২৩-এ কোন দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের ইটিএ ভিসা করতে হবে

ইটিএ ভিসা

ইটিএ মানে ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন যেটি মূলত ভিসা ছাড়া বিদেশ ভ্রমণকারীদের জন্য একটি ডিজিটাল অ্যান্ট্রি পারমিট।

এই দ্রুত অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণত স্বল্প মেয়াদে দেশান্তরের অনুমতি লাভ করা যায়।

এই সুবিধাটি বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য প্রদান করছেন শ্রীলঙ্কার সরকার। এর আবেদন প্রক্রিয়াটি শ্রীলঙ্কার অভিবাসন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেই সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা যায়। এর জন্য আবেদনকারীদের সশরীরে অভিবাসন সেন্টারে উপস্থিত থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

ইটিএর সময়সীমা প্রাথমিকভাবে শ্রীলঙ্কায় আগমনের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে এটি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত বাড়ানো যায়। প্রতি ভিজিটে ইটিএ যোগ্য নাগরিকদের দেশে ৩০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণের সুযোগ দেয়।

শ্রীলঙ্কা ইটিএ ডাবল অ্যান্ট্রিরও অনুমতি দিয়ে থাকে। এর মানে হচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিকরা ইস্যু করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন সময়সীমার মধ্যে দু’বার শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করতে পারবেন।

এই ডিজিটাল ছাড়পত্রটি ইলেকট্রনিকভাবে ভ্রমণকারীর পাসপোর্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। একবার অনুমোদিত হয়ে যাওয়ার পর ভিসাধারী ব্যক্তি শ্রীলঙ্কায় আগমনের সময় যেকোনো চেকপয়েন্ট অনায়াসেই পেরুতে পারবেন।

২০২৩-এ কোন দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের ই-ভিসা করতে হবে

ই-ভিসা

ই-ভিসা বা ইলেকট্রনিক ভিসা হলো ভিসাযুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশের জন্য ভিসার বিকল্প হিসেবে কাজ করা একটি ডিজিটাল ছাড়পত্র। ই-ভিসার আবেদন অনলাইনে সম্পন্ন করার পর আবেদনকারীর ই-মেইলে ভিসা পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ই-ভিসা এবং ইটিএ ভিসার মধ্যে সুক্ষ্ম কিছু পার্থক্য আছে। ই-ভিসা মূলত সেই সমস্ত দেশগুলোর জন্য, যেখানে প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন হয়। আর ইটিএ ভিসা হলো সেই দেশগুলোর জন্য যেখানে ভিসার দরকার নেই। ইটিএ মূলত স্বল্পকালীন থাকার জন্য সেই দেশগুলোতে প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার একটি দ্রুত এবং সহজতর উপায়।

ই-ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সাধারণ ভিসার আবেদন করার মতোই। এই ক্ষেত্রে ইটিএর আবেদনের মতোই আবেদনকারীকে ভিসা আবেদন কেন্দ্রে যেতে হয় না। ভিসার অর্থ প্রদানসহ আবেদনের যাবতীয় কাজ অনলাইনেই সম্পন্ন করা যায়।

আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর একটি ই-মেইলের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ভিসা আবেদনকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর সেটি প্রিন্ট করে সাথে নিয়ে দেশত্যাগ করতে হয়। ভিসা যাচাইয়ের কাজ অনলাইনেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে ভ্রমণকারীর নিকট ভিসার কাগজ চাওয়া হয়ে থাকে। তাই ভ্রমণের সময় মেইলকৃত নথির প্রিন্ট কপি সাথে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

মোট ২৭টি দেশ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-ভিসা ইস্যু করে।

১. অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা

২. আজারবাইজান

৩. বেনিন

৪. কম্বোডিয়া

৫. কলম্বিয়া

৬. জিবুতি

৭. ইথিওপিয়া

৮. গ্যাবন

৯. জর্জিয়া

১০. গিনি

১১. কেনিয়া

১২. কুয়েত

১৩. কিরগিজস্তান

১৪. মালয়েশিয়া

১৫. মলদোভা

১৬. মায়ানমার

১৭. ওমান

১৮. পাকিস্তান

১৯. কাতার

২০. সাও টোমে এবং প্রিনসিপে

২১. সুরিনাম

২২. তাজিকিস্তান

২৩. তুর্কি

২৪. উগান্ডা

২৫. উজবেকিস্তান

২৬. জাম্বিয়া

২৭. জিম্বাবুয়ে

শেষ কথা

হেনলি পাসপোর্ট সূচকের ২০২৩ সালের দ্বিতীয় কোয়ার্টারের পরিসংখ্যানটি উপেক্ষা করলে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অবস্থানের ওঠানামাটা ইতিবাচক ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে ভিসা ছাড়াই ১৮টি দেশ ভ্রমণ উপভোগ্য বটে। তবে যে বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি তা হলো এই ভিসামুক্ত দেশগুলো ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টে কমপক্ষে ছয় মাসের বৈধতা থাকা বাঞ্ছনীয়। সর্বসাকূল্যে এই র‍্যাঙ্কিং বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বৃহত্তর ভ্রমণের সুবিধা। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যুদস্ত দেশগুলো এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

সূত্র : ই্উএনবি

Tag :
জনপ্রিয়

আলমডাঙ্গায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে

Update Time : ০৬:৩৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩

 


হেনলি পাসপোর্ট সূচকের ২০২৩ সালের তৃতীয় কোয়ার্টারে গবেষণায় বাংলাদেশের পাসপোর্ট ১৯৯টি দেশের পাসপোর্টের মধ্যে ৯৭তম অবস্থানে। বছরের শুরুতে সূচকের প্রথম সংস্করণে বাংলাদেশ ১০১তম স্থানে ছিল। অর্থাৎ পূর্ববর্তী র‌্যাঙ্কিং থেকে চারটি দেশের পাসপোর্টের অবস্থান পেরিয়ে উপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশী পাসপোর্ট। হেনলি পাসপোর্ট সূচক মূলত ভিসা ছাড়াই দেশগুলো কতগুলো দেশে যেতে পারে তার উপর ভিত্তি করে পাসপোর্টের মূল্যায়ন করে থাকে। ২০২৩-এর দ্বিতীয় কোয়ার্টারে অবশ্য বাংলাদেশী পাসপোর্ট সূচকের তালিকায় ৯৬তম স্থানে নেমে গিয়েছিল।

চলুন, এবারের র‍্যাঙ্কিং অনুসারে, বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই কতগুলো দেশে যেতে পারছেন তা দেখে নেয়া যাক।

২০২৩-এ যে দেশগুলোতে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা

ফ্রি ভিসা

এটি বিদেশ ভ্রমণের জন্য এমন এক অনুমতি, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক আগে থেকে কোনো রকম ভিসা প্রাপ্তির প্রয়োজন ছাড়াই বিদেশে প্রবেশ করতে পারেন। ভিসামুক্ত অ্যান্ট্রি নামে পরিচিত এই নিয়মের মধ্যে ভ্রমণকারিদের কোনোরূপ ভিসা ফি প্রদান করে আনুষ্ঠানিক ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। অথচ পর্যটন, ব্যবসা বা পারিবারিক নানা উদ্দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গন্তব্যের দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেন। এই সময়কালটি বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে।

২০২৩ সালে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া ১৮টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই দেশগুলো বাংলাদেশী নাগরিকদের বিভিন্ন সময়সীমার জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের অনুমতি দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের আগে বা সেই দেশে প্রবেশকালে কোনোরূপ ভিসার নেয়ার ঝামেলায় যেতে হয় না। বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়া যেসব দেশে প্রবেশ করা যাবে সেগুলো হলো

ওশেনিয়া

১. কুক দ্বীপপুঞ্জ

২. ফিজি

৩. মাইক্রোনেশিয়া

৪. নিউ

ক্যারিবিয়ান

১. বাহামাস

২. বার্বাডোজ

৩. ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ

৪. ডমিনিকা

৫. গ্রেনাডা

৬. হাইতি

৭. জ্যামাইকা

৮. মন্টসেরাট

৯. সেন্ট কিট্স এবং নেভিস

১০. সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন্স

১১. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো

এশিয়া

১. ভুটান

আফ্রিকা

১. লেসোথো

২. গাম্বিয়া

২০২৩-এ যে দেশগুলো বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের আগমনী ভিসা সরবরাহ করবে

আগমনী ভিসা

এই অনুমতিপত্রটি অন-অ্যারাইভাল ভিসা বা ভিসা অন অ্যারাইভাল নামে পরিচিত। এটি এমন এক ধরনের ছাড়পত্র যেটি যোগ্য ভ্রমণকারীদের গন্তব্যের দেশে প্রবেশের আগ মুহূর্তে প্রদান করা হয়। গন্তব্যের দেশে যাওয়ার মুহূর্তে প্রবেশস্থল তথা বিমানবন্দর, স্থল চেকপয়েন্ট বা সমুদ্র বন্দরে এই ভিসা ইস্যু করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের আগে নিজেদের দেশে থাকা অবস্থায় আগমনী ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় না।

অন-অ্যারাইভাল ভিসার জন্য ভ্রমণকারীদের তাদের গন্তব্যের দেশ কর্তৃক নির্ধারিত কিছু শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। এই শর্তাবলি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেসব দেশ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের আগমনী ভিসা সরবরাহ করে থাকে সেগুলো হলো:

ওশেনিয়া

১. সামোয়া

২. টুভালু

৩. ভানুয়াতু

এশিয়া

১. কম্বোডিয়া

২. মালদ্বীপ

৩. নেপাল

৪. তিমুর-লেস্তে

আমেরিকা

১. বলিভিয়া

আফ্রিকা

১. বুরুন্ডি

২. কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ

৩. কোমোরো দ্বীপপুঞ্জ

৪. জিবুতি

৫. গিনি-বিসাউ

৬. মাদাগাস্কার

৭. মৌরিতানিয়া

৮. মোজাম্বিক

৯. রুয়ান্ডা

১০. সেশেল্স

১১. সিয়েরা লিওন

১২. সোমালিয়া

১৩. টোগো

২০২৩-এ কোন দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের ইটিএ ভিসা করতে হবে

ইটিএ ভিসা

ইটিএ মানে ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন যেটি মূলত ভিসা ছাড়া বিদেশ ভ্রমণকারীদের জন্য একটি ডিজিটাল অ্যান্ট্রি পারমিট।

এই দ্রুত অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণত স্বল্প মেয়াদে দেশান্তরের অনুমতি লাভ করা যায়।

এই সুবিধাটি বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য প্রদান করছেন শ্রীলঙ্কার সরকার। এর আবেদন প্রক্রিয়াটি শ্রীলঙ্কার অভিবাসন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেই সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা যায়। এর জন্য আবেদনকারীদের সশরীরে অভিবাসন সেন্টারে উপস্থিত থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

ইটিএর সময়সীমা প্রাথমিকভাবে শ্রীলঙ্কায় আগমনের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে এটি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত বাড়ানো যায়। প্রতি ভিজিটে ইটিএ যোগ্য নাগরিকদের দেশে ৩০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণের সুযোগ দেয়।

শ্রীলঙ্কা ইটিএ ডাবল অ্যান্ট্রিরও অনুমতি দিয়ে থাকে। এর মানে হচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিকরা ইস্যু করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন সময়সীমার মধ্যে দু’বার শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করতে পারবেন।

এই ডিজিটাল ছাড়পত্রটি ইলেকট্রনিকভাবে ভ্রমণকারীর পাসপোর্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। একবার অনুমোদিত হয়ে যাওয়ার পর ভিসাধারী ব্যক্তি শ্রীলঙ্কায় আগমনের সময় যেকোনো চেকপয়েন্ট অনায়াসেই পেরুতে পারবেন।

২০২৩-এ কোন দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের ই-ভিসা করতে হবে

ই-ভিসা

ই-ভিসা বা ইলেকট্রনিক ভিসা হলো ভিসাযুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশের জন্য ভিসার বিকল্প হিসেবে কাজ করা একটি ডিজিটাল ছাড়পত্র। ই-ভিসার আবেদন অনলাইনে সম্পন্ন করার পর আবেদনকারীর ই-মেইলে ভিসা পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ই-ভিসা এবং ইটিএ ভিসার মধ্যে সুক্ষ্ম কিছু পার্থক্য আছে। ই-ভিসা মূলত সেই সমস্ত দেশগুলোর জন্য, যেখানে প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন হয়। আর ইটিএ ভিসা হলো সেই দেশগুলোর জন্য যেখানে ভিসার দরকার নেই। ইটিএ মূলত স্বল্পকালীন থাকার জন্য সেই দেশগুলোতে প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার একটি দ্রুত এবং সহজতর উপায়।

ই-ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সাধারণ ভিসার আবেদন করার মতোই। এই ক্ষেত্রে ইটিএর আবেদনের মতোই আবেদনকারীকে ভিসা আবেদন কেন্দ্রে যেতে হয় না। ভিসার অর্থ প্রদানসহ আবেদনের যাবতীয় কাজ অনলাইনেই সম্পন্ন করা যায়।

আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর একটি ই-মেইলের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ভিসা আবেদনকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর সেটি প্রিন্ট করে সাথে নিয়ে দেশত্যাগ করতে হয়। ভিসা যাচাইয়ের কাজ অনলাইনেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে ভ্রমণকারীর নিকট ভিসার কাগজ চাওয়া হয়ে থাকে। তাই ভ্রমণের সময় মেইলকৃত নথির প্রিন্ট কপি সাথে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

মোট ২৭টি দেশ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-ভিসা ইস্যু করে।

১. অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা

২. আজারবাইজান

৩. বেনিন

৪. কম্বোডিয়া

৫. কলম্বিয়া

৬. জিবুতি

৭. ইথিওপিয়া

৮. গ্যাবন

৯. জর্জিয়া

১০. গিনি

১১. কেনিয়া

১২. কুয়েত

১৩. কিরগিজস্তান

১৪. মালয়েশিয়া

১৫. মলদোভা

১৬. মায়ানমার

১৭. ওমান

১৮. পাকিস্তান

১৯. কাতার

২০. সাও টোমে এবং প্রিনসিপে

২১. সুরিনাম

২২. তাজিকিস্তান

২৩. তুর্কি

২৪. উগান্ডা

২৫. উজবেকিস্তান

২৬. জাম্বিয়া

২৭. জিম্বাবুয়ে

শেষ কথা

হেনলি পাসপোর্ট সূচকের ২০২৩ সালের দ্বিতীয় কোয়ার্টারের পরিসংখ্যানটি উপেক্ষা করলে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অবস্থানের ওঠানামাটা ইতিবাচক ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে ভিসা ছাড়াই ১৮টি দেশ ভ্রমণ উপভোগ্য বটে। তবে যে বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি তা হলো এই ভিসামুক্ত দেশগুলো ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টে কমপক্ষে ছয় মাসের বৈধতা থাকা বাঞ্ছনীয়। সর্বসাকূল্যে এই র‍্যাঙ্কিং বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বৃহত্তর ভ্রমণের সুবিধা। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যুদস্ত দেশগুলো এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

সূত্র : ই্উএনবি