চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মমিনপুর ইউনিয়নের মমিনপুর রেলস্টেশনে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বিনামূল্যে ইফতার বিতরণ করে আসছেন খাইরুল ইসলাম ওরফে মননরম। তিনি প্রতিদিন শতাধিক অসহায় ও পথচারী মানুষকে ইফতার করান, যা এই অঞ্চলের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
এক মহতী উদ্যোগের ১৪ বছর
৮০ বছরের খাইরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এ মহতী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিবছর পবিত্র মাহে রমজানে রেলগেটের পাশে বসিয়ে অসহায় ও পথচারীদের ইফতার পরিবেশন করেন তিনি।
সিদ্দিক আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, “আমি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে দেখছি এখানে খাইরুল ইসলাম ইফতার করাচ্ছেন। প্রতিবছরই এখানে ইফতার করি, এটা আমার খুব ভালো লাগে। তার এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।”
স্থানীয় আরেকজন, মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, “খাইরুল ইসলামের মতো উদার মনের মানুষ খুব কমই আছে। তিনি পথচারীদের ডাকেন, তাদের সম্মানের সঙ্গে ইফতার করান। সমাজে তার মতো মানুষের খুব প্রয়োজন।”
রেলগেটম্যানের অভিজ্ঞতা
মমিনপুর রেলস্টেশনের রেলগেটম্যান সাইদুর রহমান বলেন, “আমি এখানে চার বছর আগে যোগদান করেছি। সেই থেকে প্রতি বছরই দেখছি, খাইরুল ইসলাম এখানে ইফতার করান। আমি নিজেও তার এই মহৎ উদ্যোগে অংশ নিই। এমন উদ্যোগ সত্যিই বিরল।”
উদ্যোক্তার বক্তব্য
খাইরুল ইসলাম বলেন, “আমি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এই ইফতার আয়োজন করছি। বর্তমানে একটি ছোট ছাগলের হাট পরিচালনা করি, সেখান থেকে যা আয় হয়, তা অসহায়দের জন্য ব্যয় করি। আমার ছোট মেয়ে রেলওয়ে বিভাগে চাকরি করে, সেখান থেকে কিছু অর্থ আসে, যা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আল্লাহর রহমতে আমরা ভালোভাবেই চলতে পারি, আর অসহায়দের সেবা করেই আমি শান্তি পাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, সমাজের বিত্তবানরা যেন অসহায়দের পাশে দাঁড়ান। আমার বয়স হয়েছে, তাই চাই, ভবিষ্যতে আমার উত্তরসূরিরা এই উদ্যোগ চালিয়ে নিয়ে যাক। এমন মহৎ কাজে যুক্ত থেকেই যেন আমি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারি, সেই দোয়া চাই সবার কাছে।”
খাইরুল ইসলামের এই মহতী উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। সমাজের সকল বিত্তবান ব্যক্তিদের এগিয়ে এসে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এটি হতেপারে একটি অনুপ্রেরণা।