১১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে পারেন বন্যাদুর্গতরা,সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ রামগঞ্জ

 

 

লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। খুবই ধীরে ধীরে নামছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার পানি। এ জেলার এখনো প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানি বন্দী । জমে থাকা পানির কারনে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই। বেশির ভাগ জমি পানিতে তলিয়ে থাকায় বিভিন্ন ধরনের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে । হাজার হাজার মাছের ঘেরও প্লাবিত । গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে মনে করেছেন এলাকাবাসী। বন্যার পানি দ্রুত না নামলে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলেও শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমান ত্রান আসলেও পানির কারনে দূর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা।
বন্যা কারণে লক্ষ্মীপুর জেলাতে কৃষি মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর হিসেবে মতে, কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা, প্রাণিসম্পদ খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং মৎস্য খাতে ২৪০ কোটি টাকা এ ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০কোটি টাকার বেশি । এতে পথে বসায় উপক্রম হয়েছে কৃষক, মৎস্য চাষি ও পশু-পোল্ট্রি খামারিদের।
পানি না নামায় সংযোগ সড়কগুলোর উপরে কোমর বা হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের। দুর্গত এলাকায় বাসিন্দাদের চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বসতঘরের ভিতরে এখনো পানি রয়েছে।
পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এ জেলার খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা এলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা পৌঁছাতে পারছেন না।
পানি প্রবাহের মূল খালগুলোতে প্রায় ৩ হাজার বাঁধ,ভেসাল জাল, মাছ চাষ ও ময়লার ভাগাড়সহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকায় পানি নামতে পারছে না। ফলে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতার কবলে থাকতে হতে পারে এ অঞ্চলের বন্যা কবলিত বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা বলছেন- রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল, ডাকাতিয়া খাল, রামগঞ্জ উপজেলার বিরেন্দ্র খাল, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ভুলুয়া খাল হয়ে মূলত মেঘনায় প্রবাহিত হয় পানি। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে প্রভাবশালী মহলের কবলে খালগুলোর বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে যায়। তাছাড়া দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে খালগুলোর বিভিন্ন অংশে ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানা জমে পানির গতি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বন্যার পানিও এসব খাল দিয়ে নামতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জেলার সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন রামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, দ্রুত পানি নামার জন্য আমরা প্রায় শতাধীক বাধ কেটে দিয়েছি। এ উপজেলার অভিশাপ রামগঞ্জ বিরেন্দ্র খাল সংস্কার ও পরিস্কারে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। খালের ময়লা অপসারন করা হচ্ছে, আশা করছি ভালো একটা ফলাফল পাবো।

জনপ্রিয়

আলমডাঙ্গায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

লক্ষ্মীপুরে দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে পারেন বন্যাদুর্গতরা,সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ রামগঞ্জ

Update Time : ১১:৫৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

 

লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। খুবই ধীরে ধীরে নামছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার পানি। এ জেলার এখনো প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানি বন্দী । জমে থাকা পানির কারনে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই। বেশির ভাগ জমি পানিতে তলিয়ে থাকায় বিভিন্ন ধরনের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে । হাজার হাজার মাছের ঘেরও প্লাবিত । গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যাদুর্গতরা। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে মনে করেছেন এলাকাবাসী। বন্যার পানি দ্রুত না নামলে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলেও শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমান ত্রান আসলেও পানির কারনে দূর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা।
বন্যা কারণে লক্ষ্মীপুর জেলাতে কৃষি মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর হিসেবে মতে, কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা, প্রাণিসম্পদ খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং মৎস্য খাতে ২৪০ কোটি টাকা এ ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০কোটি টাকার বেশি । এতে পথে বসায় উপক্রম হয়েছে কৃষক, মৎস্য চাষি ও পশু-পোল্ট্রি খামারিদের।
পানি না নামায় সংযোগ সড়কগুলোর উপরে কোমর বা হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের। দুর্গত এলাকায় বাসিন্দাদের চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বসতঘরের ভিতরে এখনো পানি রয়েছে।
পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এ জেলার খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা এলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা পৌঁছাতে পারছেন না।
পানি প্রবাহের মূল খালগুলোতে প্রায় ৩ হাজার বাঁধ,ভেসাল জাল, মাছ চাষ ও ময়লার ভাগাড়সহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকায় পানি নামতে পারছে না। ফলে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতার কবলে থাকতে হতে পারে এ অঞ্চলের বন্যা কবলিত বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা বলছেন- রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল, ডাকাতিয়া খাল, রামগঞ্জ উপজেলার বিরেন্দ্র খাল, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ভুলুয়া খাল হয়ে মূলত মেঘনায় প্রবাহিত হয় পানি। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে প্রভাবশালী মহলের কবলে খালগুলোর বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে যায়। তাছাড়া দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে খালগুলোর বিভিন্ন অংশে ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানা জমে পানির গতি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বন্যার পানিও এসব খাল দিয়ে নামতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জেলার সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন রামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, দ্রুত পানি নামার জন্য আমরা প্রায় শতাধীক বাধ কেটে দিয়েছি। এ উপজেলার অভিশাপ রামগঞ্জ বিরেন্দ্র খাল সংস্কার ও পরিস্কারে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। খালের ময়লা অপসারন করা হচ্ছে, আশা করছি ভালো একটা ফলাফল পাবো।