০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজ

  • Update Time : ০৬:০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
  • ১০৯ Time View

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজরমজানের রোজা ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সঙ্গে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা। ইসলামি বিধান মতে, রমজান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ। তবে রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে ফরজ রোজা নেই।
রোজা ফরজ হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। প্রথম শর্ত হলো- রোজাদারকে মুসলিম হতে হবে। অর্থাৎ কাফির, নাস্তিক কিংবা মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর রোজা ফরজ নয়।

সুস্থ, প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। কিন্তু মুসলিম হলেই কি রমজানের রোজা রাখা বাধ্যতামূলক? নাকি এরমধ্যেও বিধি নিষেধ আছে? ইসলামি শরিয়তে রমজানের রোজা রাখার ব্যাপারে দিকনির্দেশনাই বা কী?

মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ

অর্থ: ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজ

সবার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, বরং রোজা পালনের জন্যও রয়েছে শর্ত। যেসব শর্ত সাপেক্ষে রোজা ফরজ তাহলো-

(১) রোজা রাখার জন্য প্রথমত মুসলমান হতে হবে। অমুসলিমদের জন্য ইসলামে রোজা রাখার কোনো হুকুম নেই।

(২) রোজাদারকে বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। মুসলিম ছেলে-মেয়ের বয়স ৭ বছর হলেই রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া। যদি তারা রোজা পালনে সক্ষম হয়। তবে আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ নামাজের সঙ্গে তুলনা করে ১০ বছর বয়সে রোজা না রাখলে দৈহিক শাস্তির কথা বলেছেন। তবে ৭ বছর বয়স থেকে ছেলে-মেয়ে রোজা রাখলে তারা সাওয়াব পাবে। আর ভালো কাজে উৎসাহিত করার কারণে উৎসাহ দাতা বা বাবা-মাও সাওয়াব পাবেন। হাদিসে এসেছে-

‘যখন আশুরার রোজা ফরজ ছিল তখন আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে রোজা রাখাতাম। আর খাবারের জন্য কান্না করলে তাদেরকে তুলা দিয়ে তৈরি আকর্ষণীয় খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আমরা এটা করতাম ইফতারের সময় পর্যন্ত।’ (বুখারি)

(৩) রোজা রাখার জন্য মুকিম বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি সফরে বের না হয়, তবে তার জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। যদি কেউ দীর্ঘ সফরে বের হয় তবে তার জন্য রোজা রাখার বিধানকে সহজ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ

অর্থ: ‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৪)

(৪) যে ব্যক্তি রোজা রাখবে তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোজা রাখতে সক্ষম হতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখলে জীবননাশের আশংকা থাকে তবে এ পরিস্থিতিতে রোজার বিধান সহজ। আল্লাহ তাআলা বলেন- فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ

অর্থ: ‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৪)

(৫) রোজা রাখার জন্য নারীদের হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও নেফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ইসলামে নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবকে হায়েজ বলা হয়। হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। এ সময় তাদের জন্য রোজা রাখার হুকুম নেই। আর সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর নারীদের প্রথম ৪০ দিন হলো নেফাসের সময়। এ দুই সময়ে নারীদের রোজা বিধান থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে তাদের জন্য এ সময়ের নামাজের বিধান মাফ করা হলেও পরবর্তীতে তাদের রমজানের ভাংতি রোজাগুলো পূর্ণ করতে হবে।

(৬) রমজানের মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয় তবে সে সময় থেকে তাকে রোজা রাখতে হবে। কেননা মুসলমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর রোজার বিধানও ফরজ হয়ে যায়।

(৭) রমজান মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো ছেলে-মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তবে তাদের জন্যও রোজা রাখা ফরজ।

(৮) রমজানের রোজা শুরু হওয়ার আগে পাগল ছিল কিন্তু রমজান শুরু হওয়ার পর পাগল ভালো হয়ে যায় তবে তার ওপর রোজা রাখা ফরজ। পাগল ভালো হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজা হুকুমের আওতায় এসে যাবে। রোজা চলাকালীন অবস্থায় ভালো হলে সেক্ষেত্রে তাদের ইফতারের সময় পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, ইসলাম গ্রহণকারী, বালেগ হওয়া ছেলে-মেয়ে কিংবা ভালো হওয়া পাগল ব্যক্তির আগের রোজা আদায় তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেননা আগের রোজাগুলো অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আবশ্যক ছিল না।

(৯) যারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ভালো হয়ে যায় তবে তাদের ভালো থাকার সময় রোজা রাখা আবশ্যক। রোজা অবস্থায় যদি কেউ পাগল হয়ে যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তাদের জন্য রোজা হুকুম বাতিল হবে না।

(১০) রমজান মাসে কোনো মানুষ মারা গেলে অবশিষ্ট রোজা রাখায় তাদের জন্য কোনো হুকুম নেই। আত্মীয়দের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির রোজা রাখায়ও বাধ্যবাধকতা নেই।

(১১) যদি কেউ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে অজ্ঞতায় থেকে রোজা না রাখে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হবে না। রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানার পরপর তার ওপর রোজা রাখা বধ্যতামূলক।

(১২) আবার কেউ যদি রমজান মাসের দিনের বেলায় না জানার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে মিলিত হয় তবে অধিকাংশ আলেমের মতে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে মুসলিম এলাকায় বসবাস করে রোজা ফরজ কিনা কিংবা সহবাস হারাম কিনা এ বিষয়ে জানা নেই বললে এ ওজর গ্রহণযোগ্য হবে না।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ফরজ রোজা পালনে উপরোক্ত হুকুম-আহকামগুলো জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আলোচকঃ মুফতি বনি ইয়ামিন ????

Tag :
জনপ্রিয়

রাঙ্গামাটির সাজেকে ডাম্প ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজ

Update Time : ০৬:০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজরমজানের রোজা ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সঙ্গে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোজা। ইসলামি বিধান মতে, রমজান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ। তবে রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে ফরজ রোজা নেই।
রোজা ফরজ হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। প্রথম শর্ত হলো- রোজাদারকে মুসলিম হতে হবে। অর্থাৎ কাফির, নাস্তিক কিংবা মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর রোজা ফরজ নয়।

সুস্থ, প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। কিন্তু মুসলিম হলেই কি রমজানের রোজা রাখা বাধ্যতামূলক? নাকি এরমধ্যেও বিধি নিষেধ আছে? ইসলামি শরিয়তে রমজানের রোজা রাখার ব্যাপারে দিকনির্দেশনাই বা কী?

মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ

অর্থ: ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

রমজানের রোজা যাদের উপর ফরজ

সবার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, বরং রোজা পালনের জন্যও রয়েছে শর্ত। যেসব শর্ত সাপেক্ষে রোজা ফরজ তাহলো-

(১) রোজা রাখার জন্য প্রথমত মুসলমান হতে হবে। অমুসলিমদের জন্য ইসলামে রোজা রাখার কোনো হুকুম নেই।

(২) রোজাদারকে বালেগ বা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। মুসলিম ছেলে-মেয়ের বয়স ৭ বছর হলেই রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া। যদি তারা রোজা পালনে সক্ষম হয়। তবে আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ নামাজের সঙ্গে তুলনা করে ১০ বছর বয়সে রোজা না রাখলে দৈহিক শাস্তির কথা বলেছেন। তবে ৭ বছর বয়স থেকে ছেলে-মেয়ে রোজা রাখলে তারা সাওয়াব পাবে। আর ভালো কাজে উৎসাহিত করার কারণে উৎসাহ দাতা বা বাবা-মাও সাওয়াব পাবেন। হাদিসে এসেছে-

‘যখন আশুরার রোজা ফরজ ছিল তখন আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে রোজা রাখাতাম। আর খাবারের জন্য কান্না করলে তাদেরকে তুলা দিয়ে তৈরি আকর্ষণীয় খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আমরা এটা করতাম ইফতারের সময় পর্যন্ত।’ (বুখারি)

(৩) রোজা রাখার জন্য মুকিম বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি সফরে বের না হয়, তবে তার জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। যদি কেউ দীর্ঘ সফরে বের হয় তবে তার জন্য রোজা রাখার বিধানকে সহজ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ

অর্থ: ‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৪)

(৪) যে ব্যক্তি রোজা রাখবে তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও রোজা রাখতে সক্ষম হতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখলে জীবননাশের আশংকা থাকে তবে এ পরিস্থিতিতে রোজার বিধান সহজ। আল্লাহ তাআলা বলেন- فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ

অর্থ: ‘যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকে তবে সে অন্য সময় গণনা পূরণ (পালন) করবে।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৪)

(৫) রোজা রাখার জন্য নারীদের হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও নেফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) থেকে মুক্ত থাকতে হবে। ইসলামে নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবকে হায়েজ বলা হয়। হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। এ সময় তাদের জন্য রোজা রাখার হুকুম নেই। আর সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর নারীদের প্রথম ৪০ দিন হলো নেফাসের সময়। এ দুই সময়ে নারীদের রোজা বিধান থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে তাদের জন্য এ সময়ের নামাজের বিধান মাফ করা হলেও পরবর্তীতে তাদের রমজানের ভাংতি রোজাগুলো পূর্ণ করতে হবে।

(৬) রমজানের মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয় তবে সে সময় থেকে তাকে রোজা রাখতে হবে। কেননা মুসলমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর রোজার বিধানও ফরজ হয়ে যায়।

(৭) রমজান মাসের দিনের বেলায় যদি কোনো ছেলে-মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তবে তাদের জন্যও রোজা রাখা ফরজ।

(৮) রমজানের রোজা শুরু হওয়ার আগে পাগল ছিল কিন্তু রমজান শুরু হওয়ার পর পাগল ভালো হয়ে যায় তবে তার ওপর রোজা রাখা ফরজ। পাগল ভালো হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজা হুকুমের আওতায় এসে যাবে। রোজা চলাকালীন অবস্থায় ভালো হলে সেক্ষেত্রে তাদের ইফতারের সময় পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, ইসলাম গ্রহণকারী, বালেগ হওয়া ছেলে-মেয়ে কিংবা ভালো হওয়া পাগল ব্যক্তির আগের রোজা আদায় তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেননা আগের রোজাগুলো অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের ওপর আবশ্যক ছিল না।

(৯) যারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ভালো হয়ে যায় তবে তাদের ভালো থাকার সময় রোজা রাখা আবশ্যক। রোজা অবস্থায় যদি কেউ পাগল হয়ে যায় কিংবা অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তাদের জন্য রোজা হুকুম বাতিল হবে না।

(১০) রমজান মাসে কোনো মানুষ মারা গেলে অবশিষ্ট রোজা রাখায় তাদের জন্য কোনো হুকুম নেই। আত্মীয়দের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির রোজা রাখায়ও বাধ্যবাধকতা নেই।

(১১) যদি কেউ রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে অজ্ঞতায় থেকে রোজা না রাখে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হবে না। রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানার পরপর তার ওপর রোজা রাখা বধ্যতামূলক।

(১২) আবার কেউ যদি রমজান মাসের দিনের বেলায় না জানার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে মিলিত হয় তবে অধিকাংশ আলেমের মতে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে মুসলিম এলাকায় বসবাস করে রোজা ফরজ কিনা কিংবা সহবাস হারাম কিনা এ বিষয়ে জানা নেই বললে এ ওজর গ্রহণযোগ্য হবে না।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ফরজ রোজা পালনে উপরোক্ত হুকুম-আহকামগুলো জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আলোচকঃ মুফতি বনি ইয়ামিন ????