চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম পারিবারিক আর্থিক সংকটে ১৯৬৮ সালে মাত্র ৬৭ টাকা পকেটে নিয়ে ঢাকায় আসেন। শুরু হয় তাঁর সংগ্রামী জীবন। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি মেসে মাসিক ১৫ টাকা ভাড়ায় থাকতেন। ইসলামপুরে দোকানে দোকানে পণ্য বিক্রি করে মাসে কমিশনে আয় করতেন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা।
২. বিক্রয়কর্মী হিসেবে প্রথম কাজ
ঢাকায় এসে তিনি তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট তৈয়ব আশরাফ টেক্সটাইল মিলস–এর বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে ছিল মরিয়ম টেক্সটাইল, আরটেক্স ফ্যাব্রিকস, নাজনীন ফ্যাব্রিকস—যেখানে ক্যারোলিন গেঞ্জি, মশারি, ওড়না ও পলিয়েস্টার কাপড় বিক্রি করতেন তিনি। পাশাপাশি নিজের পছন্দে পণ্য তৈরি করে বিক্রি করে মূলধন জমাতে থাকেন।
৩. মুক্তিযুদ্ধ ও নতুন শুরু
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফিরে যান গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায়। সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। যুদ্ধ শেষে ঢাকায় ফিরে এসে নতুন করে শুরু করেন জীবন। এ সময় আগের প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দুরবস্থার কারণে কিছু কারখানা ভাড়ায় নিয়ে উৎপাদন শুরু করেন।
৪. উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ (১৯৭৬)
১৯৭৬ সালে পাওনা আদায়ে ব্যাংকগুলো মরিয়ম, আরটেক্স ও নাজনীন ফ্যাব্রিকস নিলামে তুললে তিনি সেগুলোর যন্ত্রপাতি কিনে নেন। প্রথমে আরটেক্স ফ্যাব্রিকসের ৪টি মেশিন কিনে বিনিয়োগ করেন ৮ লাখ টাকা। তখন কর্মী ছিলেন ২২ জন। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর উদ্যোক্তা জীবন। ওই বছরেই জন্ম নেন তাঁর বড় ছেলে নোমান।
৫. নোমান গ্রুপের আত্মপ্রকাশ (১৯৮৭)
১৯৮৭ সালে বড় ছেলে এ এস এম রফিকুল ইসলাম নোমান–এর নামে প্রতিষ্ঠিত হয় নোমান গ্রুপ। মরিয়ম, আরটেক্স, নাজনীন ফ্যাব্রিকস–সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একত্রিত করে গড়ে ওঠে বৃহৎ এই শিল্পগোষ্ঠী। বর্তমানে গ্রুপের অধীনে ৩২টি কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু পরিবারের সদস্যদের নামেও প্রতিষ্ঠিত।
৬. ব্যাংকবিমুখ শুরু, আত্মনির্ভর নীতি
১৯৯০ সাল পর্যন্ত কোনো ব্যাংকঋণ না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন নুরুল ইসলাম। নিজেই কাঁচামাল, রঙ, নকশা, বিক্রি—সব কিছু সামাল দিতেন। এখনো প্রতিদিন ১৮–২০ ঘণ্টা পরিশ্রমে তিনি কোম্পানির পরামর্শক হিসেবে যুক্ত আছেন।
৭. রপ্তানি যাত্রা ও জাবের অ্যান্ড জোবায়ের (২০০০)
২০০০ সালে শুরু হয় নোমান গ্রুপের রপ্তানি। জাবের ও জোবায়ের নামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ছেলের নামে প্রতিষ্ঠিত হয় জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফ্যাব্রিকস,
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম বনি ইয়ামিন (এল এল এম- ইবি)
প্রধান সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ হক
অক্সফোর্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড