আব্দুল্লাহ ও মামুন (আলমডাঙ্গা), চুয়াডাঙ্গা:
মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অন্যকে বাঁচিয়ে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আবুল কালাম। আলমডাঙ্গা পৌর শহরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি সারা জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
গত ৫ই সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পাশে জিকে সেচ প্রকল্পের ক্যানালের উপর অবস্থিত সাদা ব্রিজ থেকে এক নারী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পানিতে লাফ দেন। পানির স্রোতে তলিয়ে যেতে থাকলেও কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। যখন সবাই মোবাইল ফোনে সেই মর্মান্তিক দৃশ্য ধারণ করতে ব্যস্ত, তখন মধ্যবয়সী আবুল কালাম নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
আবুল কালামের বীরত্বের কারণে ব্রিজের উপরে থাকা মানুষের সহযোগিতায় ডুবন্ত নারীকে রশি দিয়ে টেনে নিরাপদে উপরে তুলে আনা হয়। কিন্তু সবাই যখন ওই নারীকে নিয়ে ব্যস্ত, তখন পানির স্রোতের ঘূর্ণনে আবুল কালাম নিজেই তলিয়ে যেতে থাকেন। সাহায্যের জন্য আহ্বান করলেও ব্রিজের উপরে থাকা কেউই বুঝতে পারেনি যে সাঁতারু আবুল কালাম ডুবে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি পানিতে তলিয়ে যান।
দীর্ঘ সময় তার কোনো সাড়া না পেয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিচলিত হয়ে তাকে খুঁজতে শুরু করেন। এরপর আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়েও তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে ডুবুরি দলও অভিযান শুরু করে, যা শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত চলে। তবুও আবুল কালামকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অবশেষে, আলমডাঙ্গা গণ ত্রাণ কমিটির স্বেচ্ছাসেবক এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শনিবার সকাল ৭:৩০ মিনিটে, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূরে আবুল কালামের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৩৯ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
নিহত আবুল কালাম শহরের কাচারি বাজার এলাকার বাসিন্দা, মৃত আব্দুল মজিদের সন্তান। মানবতার প্রয়োজনেই নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি, আর তার এই আত্মত্যাগ এখন জেলাবাসীর মুখে মুখে
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম বনি ইয়ামিন (এল এল এম- ইবি)
প্রধান সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ হক
অক্সফোর্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড