চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান এবং মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মোঃ শামসুদ্দোহা শিমুল এর শেষ জানাযা নামাজ ও দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) জুম্মার নামাজের পর জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে জানাযা নামাজ ও দাফনকার্য সম্পন্ন হয় , এর আগে, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকার গ্রিন রোডে অবস্থিত কমফোর্ট হাসপাতালে সেফটোপ্লাস্টি সার্জারি করার জন্য জনাব সামসুদ্দোহা শিমুলকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কর্তব্যরত ডাক্তার জনাব ড. জাহির আল-আমীন এবং ইফতেখারুল কাওসার (যিনি এনেস্থেসিয়া দেন) রোগীর অপারেশন করতে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। সাধারণত উক্ত অপারেশন শেষ করতে সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট লাগলেও ডাক্তার অনেক সময় নেওয়ায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা উদগ্রীব হয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রথমে তারা বলতে অস্বীকার করলেও কর্তব্যরত ডাক্তার উপায়োন্তর না পেয়ে এক পর্যায়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে স্বজনদের জানায় রোগী মারা গেছে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ঐ ডাক্তার তাৎক্ষনিক আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঐ ডাক্তারকে অজ্ঞাত জায়গা থেকে বের করে লোক দেখানো পুলিশের হাতে সোপার্দ করে দেন। প্রতক্ষদর্শীদের মতে, উক্ত ডাক্তার এবং যিনি এনেস্থেসিয়া দেন তিনিসহ অপারেশন থিয়েটার প্রবেশ করার পূর্বে মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে দেখে স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছিল।
ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করায় মৃত্যুর প্রতিবাদে গত বুধবার মৃত ব্যক্তির পক্ষে বাদী হয়ে জনাব রিয়াজ ইসলাম (ভাগ্নে) কলাবাগান থানায় কমফোর্ট হাসপাতালের ডাক্তার ড. জাহির আল-আমীনকে প্রধান আসামী করে মোট ৪ ব্যাক্তীর নামে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে আজ( বৃ্হস্পতিবার) মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার পূর্বেই আসামীদের কোর্টে তোলা হলে মামলাটি বিচার বিশ্লেষণ করে মহামান্য আদালত প্রধান আসামীসহ বাকীদেরকে জামিন মঞ্জুর করেন।
সামসুদ্দোহা শিমুল এর স্ত্রী সায়মা সুলতানা বলেন, ‘‘আমার স্বামী জনাব সামসুদ্দোহ শিমুল একজন সুস্থ সবল মানুষ। সেফটোপ্লাস্টি সার্জারি মত এমন একটি ছোট সার্জারি করে আমার স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার স¦ামী পৃথিবীতে নেই। আমার দুটো সন্তান। তারা কাঁদতে কাঁদতে র্মূছা যাচ্ছে। আমার দুই সন্তানকে আমি কি বলে শান্তানা দিবো সেই ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের সব শেষ। আমি আমার স্বামীর হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
ব্যাপারে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের হেড অব ব্র্যান্ড সোহেল কিবরিয়া বলেন, আমরা বার বার বলে স্বত্তেও পুলিশ নিজেদের ইচ্ছায় মামলার ধারা ঠিক করেন। আমাদের এখন প্রধান অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। আমরা বিচার চাই। পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে যাব। শনিবার প্রেসক্লাবের সামনে আমরা ‘জাস্টিস ফর শিমুল’ ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবো এবং স্মারকলিপি পেশ করবো।”
শামসুদ্দোহা শিমুল চুয়াডাঙ্গার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন , বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টর এর আইকন, অটবি ফার্নিচার কোম্পানির সাবেক জেনেরাল ম্যানেজার, এসি আই গ্রুপের সাবেক পরিচালক এবং মিনিস্টার- মাইওয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জনাব সামসুদ্দোহা শিমুল দায়িত্ব পালন করেন। তার অকালপ্রয়াণে দেশের ব্যবসায়ী সমাজেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কয়েকজন বন্ধু গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, সামসুদ্দোহা শিমুল এর মতো একজন বিনয়ী ও মেধাবী ছেলে হারিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ।
তার মৃত্যুতে যেমন আমরা একজন ভালো কর্পোরেট বন্ধু হারিয়েছি ঠিক তেমনি একজন ভালো বন্ধুকে হারিয়েছি।
এ সময় সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ সহ মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারী, বন্ধু, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এম বনি ইয়ামিন (এল এল এম- ইবি)
প্রধান সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ হক
অক্সফোর্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড