কোলাহল ও কর্মব্যস্ততার স্থানটি এখন নীরব। নানা জটিলতা ও আমদানি হ্রাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে রেলপথে আসা বাণিজ্যের একটি বড় অংশই হয়ে থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে। ভারত থেকে ভুট্টা, পাথর, পেঁয়াজ, চায়না ক্লে, ফ্লাই অ্যাশ, জিপসামসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ওয়াগন এখানে নিয়মিত আসত।
কিন্তু বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব, আর বিপাকে পড়েছেন ট্রাকচালক ও শ্রমিকরা।
স্থানীয় শ্রমিক ও ট্রাকচালকদের অভিযোগ, বন্দর এলাকায় এখন কাজ নেই বললেই চলে। ফলে তাদের অলস সময় কাটছে, সংসার খরচ মেটাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না, বলেন এক শ্রমিক।
ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা খুব খারাপ সময় পার করছি। আগের মতো রেলইয়ার্ডে এখন আর কর্মব্যস্ততা নেই। আমদানি না থাকায় আমাদের শ্রমিক ও চালকেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন
সিঅ্যান্ডএফ (ঈ্ঋ) ব্যবসায়ীরাও একই হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষায়, দর্শনা রেলবন্দর একটি ঐতিহ্যবাহী বন্দর। এখান দিয়ে সবসময় প্রচুর পরিমাণে পণ্য আমদানি হতো। কিন্তু বর্তমানে আমদানি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। আমদানি বাড়লেই আবার প্রাণ ফিরবে বন্দরে।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মির্জা কামরুল হক জানান, গত এক বছরে রাজস্ব আয় কমেছে প্রায় ১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ হাজার ৭৪৯ ওয়াগনে ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৫৫৯ টন পণ্য আমদানি হয়, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয় ২৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অপরদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৮৬ ওয়াগনে ২ লাখ ৫২ হাজার ১০১ টন পণ্য আমদানি হয়েছে, যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র ১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, এতে করে আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম রাজস্ব আয় করেছি।