জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চুয়াডাঙ্গায় ভাতিজা ও ভাগ্নের হামলায় বাবা ও ছেলে নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন তৈয়ব আলী (৪০) ও তার ছেলে মিরাজ (২০)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে ১২ টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া ও ভালাইপুরের মাঝামাঝি “পোলের মাঠ” নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত তৈয়ব এবং তার ছেলে মিরাজের সঙ্গে তাদের আপন ভাতিজা বাবু (৪৩) এবং ভাগ্নে রাজু (৩২)-এর মধ্যে প্রায় দেড় কাঠা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ মেটাতে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তৈয়ব ও মিরাজ পোলের মাঠের একটি চাতালের পাশে পাট শুকাচ্ছিলেন। এ সময় বাবু এবং রাজু ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মিরাজ নিহত হন। তার বাবা তৈয়ব মারাত্মকভাবে আহত হন।
আলোকদিয়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আল হেলাল জানান, শরিকের জমি নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি আরও জানান, বাবু এবং তৈয়ব আপন চাচাতো ভাই এবং রাজু হচ্ছেন তৈয়বের ভাগ্নে।
ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় শ্রমিকরা দ্রুত পুলিশকে খবর দেয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করে, এবং আহত তৈয়বকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আফরিনা ইসলাম জানান, দুপুর ১২টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৈয়বকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) নাসের জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বাবু এবং রাজুকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নিহত বাবা-ছেলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।