১০:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে আধা পাকা আমন ধান, চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক

  • Update Time : ১২:৩০:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • 65

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে আধা পাকা আমন ধান, চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা তিনদিনের মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিতে মাটিতে নুয়ে পড়েছে রোপা আমন ধান। ফলন ঘরে তোলার আগমুহূর্তে আধা পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আমনচাষিরা। এবং আলু চাষিরা আলু লাগতে পারছে না অতি বৃষ্টিতে, আলু বিষ কিনে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন না লাগাতে পেরে। কার্তিকের শেষে এই অসময়ের বর্ষণ ধান, নতুন লাগানো ভুট্টা ও সবজিখেতে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।

সাধারণত ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই আশা প্রায় শেষ হতে বসেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের আমনের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হলুদ হয়ে আসা ধানের খেতগুলো মাটিতে মিশে রয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান শুয়ে পড়ায় ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ এলাকার কৃষক আলী হোসেন জানান ২ একর জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। আর ১৫ দিন পর ধান কাটার কথা ছিল তাঁর। হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “অনেক কষ্ট করে আবাদ করেছি। আর যখন কাটার সময় হলো, তখন পাকা ধানে মই দিয়ে গেল বৃষ্টি। জমিতে পানি জমে শিষ ভিজে নষ্ট হচ্ছে, ফলন অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দিনের টানা ও মাঝারি বৃষ্টিতে শুধু ধান নয়, ভুট্টা ও বিভিন্ন সবজিখেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ মরে যাচ্ছে। এতে ভুট্টা ও সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এবার ভালো ফলনের আশায় থাকা কৃষকদের সেই আশা যেন গুড়েবালিতে পরিণত হয়েছে। সবজির খেত নিয়েও তাঁরা চরম বিপদের শঙ্কায় রয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে এবং কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, যেসব ধান শুয়ে পড়েছে সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিতে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হবে।”
চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ৩৬ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

জনপ্রিয়

শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে আধা পাকা আমন ধান, চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক

Update Time : ১২:৩০:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে আধা পাকা আমন ধান, চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা তিনদিনের মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিতে মাটিতে নুয়ে পড়েছে রোপা আমন ধান। ফলন ঘরে তোলার আগমুহূর্তে আধা পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আমনচাষিরা। এবং আলু চাষিরা আলু লাগতে পারছে না অতি বৃষ্টিতে, আলু বিষ কিনে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন না লাগাতে পেরে। কার্তিকের শেষে এই অসময়ের বর্ষণ ধান, নতুন লাগানো ভুট্টা ও সবজিখেতে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।

সাধারণত ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই আশা প্রায় শেষ হতে বসেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের আমনের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হলুদ হয়ে আসা ধানের খেতগুলো মাটিতে মিশে রয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান শুয়ে পড়ায় ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ এলাকার কৃষক আলী হোসেন জানান ২ একর জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। আর ১৫ দিন পর ধান কাটার কথা ছিল তাঁর। হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “অনেক কষ্ট করে আবাদ করেছি। আর যখন কাটার সময় হলো, তখন পাকা ধানে মই দিয়ে গেল বৃষ্টি। জমিতে পানি জমে শিষ ভিজে নষ্ট হচ্ছে, ফলন অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দিনের টানা ও মাঝারি বৃষ্টিতে শুধু ধান নয়, ভুট্টা ও বিভিন্ন সবজিখেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ মরে যাচ্ছে। এতে ভুট্টা ও সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এবার ভালো ফলনের আশায় থাকা কৃষকদের সেই আশা যেন গুড়েবালিতে পরিণত হয়েছে। সবজির খেত নিয়েও তাঁরা চরম বিপদের শঙ্কায় রয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে এবং কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, যেসব ধান শুয়ে পড়েছে সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিতে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হবে।”
চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ৩৬ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।