০৪:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐক্যের সূর্য উঠুক মুসলিম দুনিয়ায়

  • NEWS ROOM
  • Update Time : ০৭:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • 68

 

 

🌟 ঐক্যের গুরুত্ব ও স্বরূপ

  • ইসলামী ঐক্য: ইসলাম ধর্ম ভাষা, বর্ণ ও রাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে গোটা মুসলিম জাতির মধ্যে ধর্মীয় ঐক্যের বীজ বপন করেছে।
  • সর্বস্তরের ঐক্য: নারী-পুরুষ, পীর-মুরিদ, ধনী-গরিব, শাসক-শাসিত নির্বিশেষে মুসলিম উম্মাহর সবাই এক ও অভিন্ন।
  • ‘উম্মাহ’র সংজ্ঞা: ইমাম রাগেব ইস্পাহানি (রহ.)-এর মতে, ‘উম্মাহ’ হলো মানবগোষ্ঠী যাদের মধ্যে ধর্মীয় ও জাতীয় স্বার্থে ঐক্য বিদ্যমান।
  • মদিনায় প্রতিফলন: মহানবী (সা.) মদিনা রাষ্ট্রে এই ঐক্যের প্রতিফলন ঘটান, যা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ ছিল।
  • কুরআনের আহ্বান: আল্লাহ তা’আলা আল্লাহর রজ্জুকে (কুরআন) দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে এবং বিভক্ত না হতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)
  • সাহাবিদের উদাহরণ: সাহাবিদের ভ্রাতৃত্ববোধ এত প্রগাঢ় ছিল যে তাঁরা ভাইয়ের জন্য ধনসম্পদ ও প্রিয়জন ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করতেন না।

 

💔 ঐক্যের ফাটল ও কারণ

 

  • মৌলিক বিষয়ে ঐক্য: একত্ববাদ, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, জান্নাত, জাহান্নাম—এসব মৌলিক বিষয়ে সব মুসলিম একমত।
  • মতভেদ: গৌণ বিষয়ে মতানৈক্য, দল, উপদল, ফেরকা (আহলে হাদিস, মাজহাবপন্থি, সুফিবাদী ইত্যাদি) মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে বিষফোড়ার মতো ক্ষত সৃষ্টি করেছে।
  • কুরআনের হুঁশিয়ারি: আল্লাহ তা’আলা তাদের মতো হতে নিষেধ করেছেন, যারা স্পষ্ট নিদর্শন আসার পরও বিভক্ত হয়েছে ও মতবিরোধ করেছে। (সূরা আলে ইমরান: ১০৫)
  • বহিরাগত ষড়যন্ত্র: ধর্মনিরপেক্ষবাদ, ভিন্ন ধর্মের গভীর ষড়যন্ত্র (বিশেষ করে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের) ঐক্যের ফাটলের পেছনে কাজ করছে। তাদের উদ্দেশ্য মুসলিম উম্মাহর ঐক্য নস্যাৎ করা।
  • অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা: মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ ঝগড়া, মতবিরোধ ও দুর্বলতা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা সফল করতে সাহায্য করেছে, যার ফলে একসময়ের শাসক জাতি দাসে পরিণত হয়েছে।
  • রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা: রাজনীতিকে ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত করে ধর্মকে কেবল মসজিদ ও উৎসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা; অথচ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা

 

🛠️ উত্তরণের পথ ও করণীয়

 

  • কুরআন-হাদিসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত: মতানৈক্য ও বিতর্কিত বিষয়ে ধর্মীয় পণ্ডিত ও নেতাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত নয়—এই বোধে বিশ্বাসী হলে ঐক্য মজবুত হবে।
  • আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা এবং পরস্পর ঝগড়া না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা সাহস ও শক্তি ধরে রাখার জন্য অপরিহার্য। (সূরা আনফাল: ৪৬)
  • আলেম সমাজের ভূমিকা: মুসলিম উম্মাহর ক্রান্তিলগ্নে আলেম সমাজকে নির্জীবতা ত্যাগ করে ধর্মীয় চেতনা ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে রাজনৈতিক ঐক্য গঠন করা সময়ের দাবি।
  • পারস্পরিক উদারতা ও সহিষ্ণুতা: ভিন্ন দল, ভিন্ন পথ থাকুক, তবে ইসলাম ও জাতীয় স্বার্থকে প্রথমে বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
  • বিদায় হজের ভাষণ স্মরণ: কুরআন ও হাদিস থেকে বিচ্যুতি গভীরতম ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বিদায় হজের ভাষণ ও ইসলামের মূল আদর্শে ফিরে যেতে হবে।
  • স্বতঃস্ফূর্ত ঐক্যের ডাক: মহাদুর্যোগে মুসলিম উম্মাহকে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে ঐক্যের ডাক দিতে হবে।

আপনার লেখাটি মুসলিম বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং চিন্তামূলক।

এই বিষয়ে আপনার আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে অথবা লেখাটির কোনো নির্দিষ্ট অংশ নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে, আমাকে জানাতে পারেন।

 

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় শীতের আগমন: কার্তিকের শেষে তাপমাত্রা ১৫.৮° সেলসিয়াস।

ঐক্যের সূর্য উঠুক মুসলিম দুনিয়ায়

Update Time : ০৭:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

 

 

🌟 ঐক্যের গুরুত্ব ও স্বরূপ

  • ইসলামী ঐক্য: ইসলাম ধর্ম ভাষা, বর্ণ ও রাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে গোটা মুসলিম জাতির মধ্যে ধর্মীয় ঐক্যের বীজ বপন করেছে।
  • সর্বস্তরের ঐক্য: নারী-পুরুষ, পীর-মুরিদ, ধনী-গরিব, শাসক-শাসিত নির্বিশেষে মুসলিম উম্মাহর সবাই এক ও অভিন্ন।
  • ‘উম্মাহ’র সংজ্ঞা: ইমাম রাগেব ইস্পাহানি (রহ.)-এর মতে, ‘উম্মাহ’ হলো মানবগোষ্ঠী যাদের মধ্যে ধর্মীয় ও জাতীয় স্বার্থে ঐক্য বিদ্যমান।
  • মদিনায় প্রতিফলন: মহানবী (সা.) মদিনা রাষ্ট্রে এই ঐক্যের প্রতিফলন ঘটান, যা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ ছিল।
  • কুরআনের আহ্বান: আল্লাহ তা’আলা আল্লাহর রজ্জুকে (কুরআন) দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে এবং বিভক্ত না হতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)
  • সাহাবিদের উদাহরণ: সাহাবিদের ভ্রাতৃত্ববোধ এত প্রগাঢ় ছিল যে তাঁরা ভাইয়ের জন্য ধনসম্পদ ও প্রিয়জন ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করতেন না।

 

💔 ঐক্যের ফাটল ও কারণ

 

  • মৌলিক বিষয়ে ঐক্য: একত্ববাদ, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, জান্নাত, জাহান্নাম—এসব মৌলিক বিষয়ে সব মুসলিম একমত।
  • মতভেদ: গৌণ বিষয়ে মতানৈক্য, দল, উপদল, ফেরকা (আহলে হাদিস, মাজহাবপন্থি, সুফিবাদী ইত্যাদি) মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে বিষফোড়ার মতো ক্ষত সৃষ্টি করেছে।
  • কুরআনের হুঁশিয়ারি: আল্লাহ তা’আলা তাদের মতো হতে নিষেধ করেছেন, যারা স্পষ্ট নিদর্শন আসার পরও বিভক্ত হয়েছে ও মতবিরোধ করেছে। (সূরা আলে ইমরান: ১০৫)
  • বহিরাগত ষড়যন্ত্র: ধর্মনিরপেক্ষবাদ, ভিন্ন ধর্মের গভীর ষড়যন্ত্র (বিশেষ করে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের) ঐক্যের ফাটলের পেছনে কাজ করছে। তাদের উদ্দেশ্য মুসলিম উম্মাহর ঐক্য নস্যাৎ করা।
  • অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা: মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ ঝগড়া, মতবিরোধ ও দুর্বলতা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা সফল করতে সাহায্য করেছে, যার ফলে একসময়ের শাসক জাতি দাসে পরিণত হয়েছে।
  • রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা: রাজনীতিকে ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত করে ধর্মকে কেবল মসজিদ ও উৎসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা; অথচ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা

 

🛠️ উত্তরণের পথ ও করণীয়

 

  • কুরআন-হাদিসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত: মতানৈক্য ও বিতর্কিত বিষয়ে ধর্মীয় পণ্ডিত ও নেতাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত নয়—এই বোধে বিশ্বাসী হলে ঐক্য মজবুত হবে।
  • আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা এবং পরস্পর ঝগড়া না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা সাহস ও শক্তি ধরে রাখার জন্য অপরিহার্য। (সূরা আনফাল: ৪৬)
  • আলেম সমাজের ভূমিকা: মুসলিম উম্মাহর ক্রান্তিলগ্নে আলেম সমাজকে নির্জীবতা ত্যাগ করে ধর্মীয় চেতনা ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে রাজনৈতিক ঐক্য গঠন করা সময়ের দাবি।
  • পারস্পরিক উদারতা ও সহিষ্ণুতা: ভিন্ন দল, ভিন্ন পথ থাকুক, তবে ইসলাম ও জাতীয় স্বার্থকে প্রথমে বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
  • বিদায় হজের ভাষণ স্মরণ: কুরআন ও হাদিস থেকে বিচ্যুতি গভীরতম ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বিদায় হজের ভাষণ ও ইসলামের মূল আদর্শে ফিরে যেতে হবে।
  • স্বতঃস্ফূর্ত ঐক্যের ডাক: মহাদুর্যোগে মুসলিম উম্মাহকে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে ঐক্যের ডাক দিতে হবে।

আপনার লেখাটি মুসলিম বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং চিন্তামূলক।

এই বিষয়ে আপনার আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে অথবা লেখাটির কোনো নির্দিষ্ট অংশ নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে, আমাকে জানাতে পারেন।